সিলেটের সাদা পাথর বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিদর্শন। সিলেট জেলা, বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। সিলেটের সাদা পাথর ভ্রমণ আপনাকে মুগ্ধ করবে। এখানে পাথরের স্তূপ, পাহাড়ি পরিবেশ, স্বচ্ছ পানির স্রোত দেখতে পাবেন। সাথে নৌকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এই গাইডে আপনি জানবেন সাদা পাথরের অবস্থান, ভ্রমণের সেরা সময়, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদা পাথর একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। সিলেটের সাদা পাথর ভ্রমণ পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। সিলেট শহরের আম্বরখানা বা মাজারগেট থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ যেতে হয়। পথটি প্রসস্থ এবং প্রায় ৩৫ কিলোমিটার সড়ক ঢালাই করা। এর সাথে সিলেটের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানও রয়েছে।
যেভাবে পর্যটন নগরী সিলেটে আসবেন:
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সিলেট যাওয়ার জন্য বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে। সিলেট একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। তাই এখানে পৌঁছানোর জন্য সড়ক, রেলপথ ব্যবহার করতে পারেন। বিমানপথেও যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। নিচে বিভিন্ন এলাকা থেকে সিলেটে যাওয়ার উপায় দেওয়া হলো:
১. বাসে সিলেট ভ্রমণ: ঢাকা থেকে সিলেটে আসার জন্য সব সময়ই বিভিন্ন পরিবহনের বাস পাওয়া যায়। লন্ডন এক্সপ্রেস, গ্রিন লাইন খুবই ভিআইপি পরিবহন। দেশের সকল বিভাগীয় শহর থেকে বাসে করে সিলেটে আসা যায়। এনা, শ্যামলী, হানিফ এর মধ্যে অন্যতম। এছাড়া প্রায় সকল জেলা শহর হতে বাসে করে সিলেটের আসা যায়।
২. ট্রেনে: ঢাকা ও চট্টগ্রাম হতে সরাসরি ট্রেনে করে সিলেটে আসা যায়। ঢাকা থেকে সকাল ৬.৩০ টায় পারাবাত, সকাল ১১.৩০ টায় জয়ন্তিকা, বিকাল ২.৫৫ টায় কালনী ট্রেন পাওয়া যায়। চাইলে রাত ১০.০০ টায় উপবন এক্সপ্রেসে সিলেট আসতে পারবেন। চট্টগ্রাম হতে সকালে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, রাত্রে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন পাওয়া যাবে। ভাড়া শ্রেণিভেদে ৪৫০/- থেকে শুরু করে প্রায় ১,৬০০/- পরিশোধ করতে হতে পারে।
৩. বিমানে: ঢাকা থেকে সিলেটের Osmani International Airport-এ প্রতিদিন ফ্লাইট থাকে। যাত্রা সময় প্রায় ৪৫ মিনিট। নভোএয়ার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলার বিমানে আসা যাবে। নূন্যতম ভাড়া টাকা=৪,৫০০/- মাত্র। চট্টগ্রাম হতে পূর্বে ফ্লাইট ছিল এখন নেই।

সিলেটে ভ্রমণে আবাসিক সুবিধাসমূহ:
বেশির ভাগ পর্যটকই সিলেটের বাহির থেকে আসেন। তাদের জন্য সিলেট মহানগরে থাকা বা রাত কাটানোর অনেক ধরণের আবাসিক হোটেল সুবিধা আছে। যেমন:
১. গ্রান্ড সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্ট:
উচ্চ বিলাসীদের জন্য আবাসিক হোটেল হিসেবে গ্রান্ড সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্ট অন্যতম। পাঁচ তারকা হোটেলের যে সকল সুবিধা থাকে তার সবই এখানে আছে। নিরিবিলি পরিবেশ। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের পাশে এটির অবস্থান। বিদেশি পর্যটক এবং বিদেশি ফুটবল/ ক্রিকেট দলের খেলোয়াররা সাধারনত এই হোটেলেই ওঠেন। মোবাইল: ০১৩২১-২০১৬০০।
২. হোটেল নুরজাহান গ্রান্ড:
এটি একটি থ্রি-স্টার হোটেল। রাজকীয়ভাবে থাকতে চাইলে হোটেল নুরজাহান পছন্দ করতে পারেন। মোবাইল:০১৯৩০-১১১৬৬৬, ওয়েবসাইট: https://www.noorjahangrand.com/ .
৩. রোজ-ভিউ:
রোজ ভিউ সিলেটের প্রথম আধুনিক হোটেল। আবাসিক হোটেল “রোজ ভিউ” থ্রি স্টার মানের। মূল শহরের প্রবেশ মুখে (উপশহর) এটি অবস্থিত। এই হোটেলের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় খাওয়ার উন্নত পরিবেশের পাশাপাশি সুইমিং পুল সুবিধা আছে। বিপিএল এবং বিভিন্ন টুর্নামেন্ট এর সময় বিভিন্ন দলের খেলোয়ার ও ম্যানেজমেন্ট এখানে থাকেন।
৪. অন্যান্য:
রোজ ভিউ এর পাশেই রয়েছে “গ্রান্ড সুরমা” হোটেল (মোবাইল নম্বর: ০১৭১২-৫২৪৩০১)। অল্প ভাড়ায় উন্নত পরিবেশ। এছাড়াও এসি, গিজার, ফ্রিজ এবং রেস্টুরেন্ট সুবিধা আছে এখানে। জিন্দাবাজারের গ্রান্ড প্যালেস একই মানের। কদমতলী বাস টার্মিনালে অনেক আবাসিক হোটেল আছে। হোটেল তৌফিক অন্যতম। হযরত শাহজালাল মাজার গেট এবং তৎসংলগ্ন অসংখ্যা আবাসিক হোটেল আছে। অপেক্ষাকৃত কম টাকায় এখানে থাকার সুবিধা আছে।
সিলেটের সাদা পাথর ভ্রমণ এর উপযুক্ত সময়
সাদা পাথর যাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো বর্ষাকাল এবং শরৎকাল। ইংরেজি মাস হিসেবে জুন হতে সেপ্টেম্বর। আরো ছোট করে বললে আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস। এসময় পানি সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছ থাকে। পানিতে সাতার কাটতে পারবেন। যারা সাতার পারেন না তাদের জন্য টিউবের ব্যবস্থা আছে।
প্রকৃতির পানি কতটা স্বচ্ছ হয় তা সেখানে দেখা যায়। তবে অন্যান্য সময়ও ভ্রমণ করতে পারবেন। তখন হাটু পরিমাণ পানি তো অবশ্যই পাবেন। শুক্রবার ও শনিবার এবং সরকারি ছুটিতে খুব ভিড় থাকে। বিশেষ করে দূর্গাপুজোর সময়।
সিলেট শহর হতে সাদা পাথর ভ্রমণ-এ যাওয়ার উপায়
সিলেট শহর থেকে সাদা পাথর পৌঁছানোর জন্য আপনি কয়েকটি ভ্রমণ পদ্ধতি নির্বাচন করতে পারেন:
- প্রাইভেট গাড়ি: এটি দ্রুত এবং আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য আদর্শ।
- ভাড়া করা গাড়ি: আপনি সহজেই সিলেট শহর থেকে ভাড়া করা গাড়িতে পৌঁছাতে পারেন।
- মোটর সাইকেল: একক ভ্রমণকারীদের জন্য চমৎকার বিকল্প।
- থ্রি-হুইলার সিএনজি: সিএনজি একটি সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক পদ্ধতি।
- বাস (গণপরিবহন বা রিজার্ভ): একটি সাশ্রয়ী উপায়। বিশেষ করে সিলেটের বিআরটিসি বাসে ভ্রমণ করার সময় আপনি উপভোগ করতে পারবেন দৃশ্যাবলী।
বাসে ভ্রমণ:
ব্যয়ের পরিমাণ কমাতে চাইলে বাস পছন্দের তালিকায় রাখতে হবে। সাদা পাথর ভ্রমণ অধিকতর আনন্দদায়ক করতে হলে বাস ভ্রমণই উত্তম। আম্বরখানা বা মাজারগেট হতে দুই ধরনের বাস পাওয়া যায়।
১. সাদা পাথর ভ্রমণ; এবং
২. বি.আর.টি.সি.।
সাদা পাথর ভ্রমণ নামের বাসটির বেশিরভাগ অংশই সাদা রঙের। এটি একটি সাধারণ এক ছাদের বাস। তবে, বিআরটিসি’র বাসগুলো সবই দুই তলা বিশিষ্ট। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাস পাওয়া যায়। প্রতি ৩০ মিনিট পরপর বিআরটিসি’র দুই তলা বাস আম্বরখানা, সিলেট থেকে সাদা পাথরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া, সকাল ৯.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সাদা পাথর থেকে আম্বরখানার উদ্দেশ্যে বাসগুলো চলে। সিলেট ও সাদা পাথর এই বাস চলাচল করে।
বিআরটিসি বাসে সাদা পাথর যাওয়া দৃশ্যাবলী:

ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বিআরটিসি বাস একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। সাদা পাথরে যাওয়ার বাসের জন্য ৩০ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করতে হয় না। বিআরটিসির ভাড়া ৭৫ টাকা প্রতি যাত্রী। বাসের দোতলায় ভ্রমণ করলে আনন্দ দ্বিগুণ হবে। সবুজ চা-বাগান এবং গাছপালা আপনার ভ্রমণকে বিশেষ করবে। দোতলায় বসে নিচের দৃশ্যগুলো মনকে উৎফুল্ল করে তুলবে।
সাদা পাথর ভ্রমণে বিআরটিসি বাস
- বাস ছেড়ে যাওয়ার ৩-৪ কি.মি পরেই রাস্তার দুই পাশের ন্যাশনাল টি-এস্টেট টা-বাগান(লাক্কাতুরা);
- তার কিছুটা পরেই রাস্তার বাম পাশে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। তবে বাস থেকে দেখা যাবেনা।
- কিছুটা আকাঁবাকাঁ-উচুনিচু পথ পাড়ি দিতেই বাংলাদেশের প্রথম চা-বাগান মালনিছড়া। রাস্তার দু-পাশেই সবুজ সমারোহের চা-বাগান আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
- মানলিছড়া পার হলেই রাস্তার ডানদিকে সিলেট ক্যাডেট কলেজ দেখতে পাবেন।
- ক্যাডেট কলেজ পেরোলেই বাস ডানদিকে মোড় নিবে। মোড় নেবার ৩-৪ কি.মি. পরেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ৪-৫ কি.মি রাস্তা বিমানবন্দরের গা-ঘেষে রয়েছে। সময়ক্ষণ মিলে গেলে বিমান ওঠানামা দেখতে পাবেন।
আরও যা উপভোগ করতে পারবেন
- আকাঁবাকাঁ-উচুনিচু ও হাওড় পথ পাড়ি দেবার পর ডানদিকে একটি হাইটেক পার্ক দেখা যাবে।
- রাস্তার দু-ধারে পাথর ভাঙ্গা মেশিন ও পাথর ভাঙ্গার পদ্ধতি/ ধরন দেখা যাবে।
- হাইটেক পার্ক অতিক্রম করার পর সামনের দিকে তাকালে পাহাড় দেখতে পাবেন। এ দৃশ্যগুলো দেখতে দেখতে বাস তার গন্তব্যস্থলে থামবে। এবং বাসের সুপারভাইজার বলবে নামেন নামেন সাদা পাথর আইসা পরছি।
- বাস থেকে নেমে প্রায় ১০০ মিটার হাটলেই নৌকাঘাট।
সাদা পাথরে নৌকা ভ্রমণ:
সাদা পাথর পৌছার পর মূল স্পর্টে যাওয়ার জন্য নৌকা ভ্রমণ করতে হবে। প্রতি নৌকা ৮০০ (আটশত) টাকা। যাওয়া-আসা মিলে ০২-০৩ ঘন্টা সময় দিয়ে থাকে। তবে নৌকার মাঝির সাথে আলাপের মাধ্যমে সময় বৃদ্ধি করা যায়। একটি নৌকায় ০১ থেকে সর্বোচ্চ ০৮ জন ভ্রমণ করা যায়।
আপনার দল ০৮ জনের কম সদস্যের হলে চিন্তার কারণ নেই। আপনার মন চাইলে অন্যান্য পর্যটকদের সাথে নিতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা হবেনা। তবে ৫-৬ জন হলে অন্যদের না নেওয়াই ভালো। এতে সময় ও অন্যান্য পারিপার্শিক বিষয়ে স্বাধীনতা পাবেন। নৌকা ঘাটিতে একটি টিকিট কাউন্টার আছে। এখান থেকেই টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। যে নৌকায় যাবেন সেই নৌকায় ফিরে আসবেন। এজন্য অবশ্যই নৌকার মাঝির মোবাইল নম্বর নিবেন।
সাদা পাথর মূল স্পট:
সাদা পাথরের মূল স্পট পৌঁছানোর জন্য নৌকা ভ্রমণের পর আপনাকে প্রায় ৩০০-৪০০ মিটার হাঁটতে হবে। এই পথটি পাড়ি দেয়ার পর আপনি পৌঁছাবেন সাদা পাথরের এক অনন্য দৃশ্যের মাঝে। এখানে বিশাল পাথরের স্তূপ, সাদা পাথর এবং স্বচ্ছ পানির স্রোত উপভোগ করতে পারবেন। পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পানির স্রোত আপনাকে মুগ্ধ করবে।
মূল স্পটে যা যা উপভোগ করতে পারবেন
এখানে আপনি দেখতে পাবেন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। যেখানে ভারতের বিশাল পাহাড় এবং বড় বড় পাথর দৃশ্যমান। পাহাড়ের উপর মেঘমালা আপনাকে মনে করিয়ে দেবে বৃষ্টির আগমন। এই স্থানটির শান্ত পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে ভিজতে এবং পাথরের স্রোতে সাঁতার কাটতে উত্সাহিত করবে।
এছাড়াও, সীমান্তের কাছাকাছি রয়েছে মসজিদ, গণসৌচাগার এবং কাপড় পরিবর্তনের জন্য চেঞ্জ রুম সুবিধা। ছোট বাচ্চাদের জন্য টিউব ব্যবহারের সুবিধাও রয়েছে। বিশ্রামের জন্য চৌকি-বেড পাওয়া যায়, যদিও এগুলোর জন্য ভাড়া দরদাম করে নেয়া প্রয়োজন।
সাদা পাথর ভ্রমণ: খাবারের ব্যবস্থা
সাদা পাথর মূল স্পটে খাওয়ার জন্য খুব বেশি বৈচিত্র্য পাওয়া যায় না। তবে কিছু বেসিক খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে আপনি ডাব, আইসক্রিম এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য শুকনো খাবার পাবেন। তবে ভারি খাবারের জন্য আপনাকে ফিরে আসতে হবে নৌকা ঘাট এলাকায়। এখানে কিছু সাধারণ হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে।
ঘাটে ফিরে এসে আপনি চলতি মানের কিছু খাবার পেতে পারেন। তবে খাবারের গুণগত মান দেখে খাওয়া উত্তম। পাকস্থলির সমস্যা থাকলে বা খুব বেশি ক্ষুধা না থাকলে, সাদা পাথরের স্পটে খাবার না খাওয়াই ভালো।
সিলেটে খাবারের জন্য কিছু ভালো জায়গা
সাদা পাথর ভ্রমণের পরে আপনি সিলেট শহরে ফিরে এসে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট-এ খাবার উপভোগ করতে পারেন। সিলেট শহরের বিখ্যাত খাবারের স্থানগুলো হল:
- পানসি
- ভোজনবাড়ী
- পাঁচভাই
এই রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু এবং রুচিশীল খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে, এবং দামও বেশ সাশ্রয়ী। সিলেটে আসার পরে এখানকার খাবারের স্বাদ একেবারে আলাদা, যা আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে পূর্ণ করবে।
সাথে যা যা নিবেন
সিলেটের সাদা পাথর ভ্রমণ করতে গেলে কিছু জিনিসপত্র আপনার সংগ্রহে অবশ্যই থাকতে হবে। যেমন:
- খাবার পানি;
- শুকনো খাবার। বিশেষ করে ছোট বাচ্চা থাকলে;
- ওয়াটার প্রুভ সেন্ডেল বা জুতা;
- গোসলের ইচ্ছা থাকলে অতিরিক্ত একসেট কাপড়;
- ভেজা কাপড় রাখার জন্য পলিথিন বা পৃথক কোন ব্যাগ।
সাদা পাথর ভ্রমণে সতর্কতাসমূহ
- লাল পতাকা চিহ্নিত বা সীমানা অতিক্রম করবেন না।
- চর্মরোগ থাকলে এই পানিতে না ভেজায় ভালো।
- সাবধানে ছোট বাচ্চাদের পানিতে নামাবেন।
- স্রোতের অনুকূলে একটানা গা ভাসাবেন না। শরীরের কোন অংশ বিশেষ করে মাথা পাথরে লাগলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
- ছবি উঠানোর জন্য মোবাইল পানিতে না নেয়াই ভালো। নিলেও সাবধানে ব্যবহার করবেন।
- দরদাম না করে চৌকিতে বসবেন না। টিউব ব্যবহার করবেন না।
- লকার ব্যবহার করলে লকারের চাবি নিজের কাছে রাখবেন।
- এখান থেকে ছোট-বড় যেকোন পাথর সংগ্রহ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
- সন্ধ্যা নামার আগেই ফিরে আসবেন।
অনন্য সাদা পাথর
সাদা পাথর ভ্রমণ এক অদ্বিতীয় অভিজ্ঞতা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্ত পরিবেশ এবং সুরেলা পানির স্রোত মনকে সজীব করে তোলে। সিলেটের এই স্থানটি প্রকৃতিপ্রেমী, পরিবার এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য আদর্শ গন্তব্য।
নিরাপত্তা ও সতর্কতা অবলম্বন করে সঠিক সময়ে সাদা পাথরের সৌন্দর্য উপভোগ করা জরুরি। প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং শান্তিপূর্ণ ভ্রমণের জন্য সিলেটের সাদা পাথর এক অসাধারণ গন্তব্য।
সিলেটের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ:
- হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজার শরীফ, সিলেট সদর উপজেলা, সিলেট।
- হযরত শাহপরান (রঃ) এর মাজার শরীফ, সিলেট সদর উপজেলা, সিলেট।
- জাফলং (পাহাড়, ঝর্ণা, বর্ডার), গোয়াইনঘাট, সিলেট।
- লালাখাল, জৈন্তাপুর, সিলেট।
- বিছানাকান্দি, কোম্পানীগঞ্জ, সিলেট।
- রাতারগুল, গোয়াইনঘাট, সিলেট।
- মালনীছড়া চা-বাগান (ক্যাডেট কলেজ এলাকা), সিলেট সদর উপজেলা, সিলেট।
- লাক্কাতুরা চা-বাগান, সিলেট সদর উপজেলা, সিলেট।
- হাকালুকি হাওড়, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট।
সিলেট জেলার বাইরে সিলেট বিভাগের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ:
- মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, বড়লেখা, মৌলভীবাজার।
- চা-বাগান, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।
- টাঙ্গুয়ার হাওড়, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ।
সরকারি আইন, বিধি ও নিয়মকানুন সংক্রান্ত পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন ও গেজেটের পিডিএফ কপি পেতে এখানে ক্লিক করুন–
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী:
প্রশ্ন-১। জটিল কোন সমস্যায় পরলে কি করব?
উত্তর: অবশ্যই আইনের সাহায্য নিবেন। দূর থেকে আসলে কাছের আউকে পাবেন না এটাই স্বাভাবিক। তাই যেকোন সমস্যায় আইসের সাহায্য সিলে ভালো হবে। একটু এদিক-ওদিক খুজলেই ট্যুরিস্ট পুলিশ পাবেন।
প্রশ্ন-২। এখান থেকে পাথর সংগ্রহ করা যাবে কি?
উত্তর: না। এখান থেকে ছোট-বড় যেকোন সাইজের পাথর সংগ্রহ আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। আপনি মানেন আর না মানেন, এটিই আইন। প্রকাশ্যে ধুমপান আইনত দন্ডনীয়। পুলিশ ছাড়লে কিছুইনা, কিন্তু ধরলে অবশ্যই আপনাকে দন্ড ভোগ/ জরিমানা দিতে হবে।
প্রশ্ন-৩। এখানে ভালো মানের আবাসিক হোটেল আছে?
উত্তর: না। এখানে তেমন কোন আবাসিক হোটেল নেই। রাত হলেও শহরে ফিরে আসা উত্তম।
প্রশ্ন-৪। কত সময় পর্যন্ত এখানে থাকা যায়?
উত্তর: সুর্যাস্তের ১ ঘণ্টা আগে ফিরেে আসার নির্দেশনা রয়েছে।আপনি যখনই যান না কেন সুর্যাস্তের আগে তো অবশ্যই ফিরতে আসতে হবে।
প্রশ্ন-৫। নৌকার মাঝি কত সময় দেয়?
উত্তর: সাধারনত ২ ঘণ্টার কথা বলে থাকে। অনুরোধ করে ৩-৪ ঘণ্টা সময় কাটানো যায়।
প্রশ্ন-৬। জিরো পয়েন্ট/বর্ডার ক্রস করা যাবে?
উত্তর: না। কোন ভাবেই একাজ করতে যাবেন না। সীমানা ক্রস করতে গেলে যেকোন সময় খারাপ কিছু ঘটতে পারে।